সাইফুল ইসলাম বাবুলঃ
রাসায়ন বিজ্ঞানে প্রতীক দিয়ে মৌলিক পদার্থের পরিচয় হয়। আবার ব্যবসা প্রতিষ্টানেও প্রতীক থাকে, থাকে ট্রেড মার্ক হিসাবে।যেমন গরু মার্কা ঢেউটিন। আবার বিভিন্ন সংগঠন কিংবা প্রতিষ্টানে প্রতীক থাকে মনোগ্রাম। এসবই কিন্তু স্ব স্ব প্রতিষ্টান কিংবা পদার্থের পরিচয় বহন করে।
প্রতীকের মাঝে লুকিয়ে থাকে আদর্শের কথা। আবার ভোটের জন্যও প্রতীক বরাদ্ধ থাকে। যতদিন নির্বাচনী প্রচারনা থাকবে ততদিন প্রতীকের কদর একটু বেশী থাকে। নানা রঙে সাজিয়ে প্রদর্শনীতে দেয়া হয়।
আরেকটা আছে দলীয় প্রতীক যেমন নৌকা, ধানের শীষ, দাঁড়িপাল্লা, কুড়েঘর, হাতুড়ি, কাস্তে,লাঙ্গল ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রতীক গুলোকে দলীয় কর্মীরা হৃদয়ের স্পন্দন মনে করে। তারা বিশ্বাস করে ঐ প্রতীকের ভেতর আদর্শের স্কুরপ ঘটেছে। প্রতীকের পিছনে যৎসামান্য ইতিহাসও থাকে। যেমন নৌকা অসহায় বাঙালীকে বাঁচানোর জন্য নূহ (আঃ) এর কিস্তিকে প্রতীক হিসেবে যুক্তফ্রন্টের নীর্বাচনী প্রতীক নৌকা বাচাই করা হয়েছিল। ধানের শীষ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রতীক প্রবক্তা এ কে এম ফিরোজ নুন বাংলার প্রধান ফসল পরিচিত প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ বাচাই করছিল। তেমনি জামাত ন্যায়দন্ডের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা (বিচারিক প্রতীক হিসেবে বর্তমানে বাদ)। গরীবের অধীকারের কথা বলতে গিয়ে ন্যাপ কুঁড়েঘর প্রতীক বেচে নিয়েছিল। কাস্তে কৃষক রাজ শ্রমিক রাজের প্রতীক। হাতুড়ি বিপ্লবের প্রতীক। এরশাদ সাহেবও মাটি ও মানুষের কাছে আসার জন্য লাঙ্গল প্রতীক নিয়েছিলেন। অবশ্য আধুনিক ছেলে মেয়েরা হয়ত এসব প্রতীকের নামও জানেনা। কারন এসব দ্রব্যাদীর ইতিহাস থকতে পারে। বাস্তবে অনেক কিছুই এখন নেই।
এবার প্রতীক টানাটানির গল্পে আসিঃ- টি স্টলে শুনি অমুক নেতার আশির্বদে প্রতীক পাবে, না হয় টাকার জোরে প্রতীক পাবেন না হয় চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতীক পাবে। কেউ কিন্তু বলছেনা সে নিবেদিত প্রাণ, আদর্শীক নেতা, জনগণের পছন্দের। তা হলে প্রতীক খেলনার বস্ত হয়ে গেলনা? প্রতীক জোগাড় করতে যদি বহুল অর্থ খরচ হয় কিংবা গলদঘর্ম হয়। তা হলে সে কি ভাবে জনসেবা করবে। তা হলে প্রতীকটি আদর্শের না হয়ে ট্রেডমার্ক হবে!
প্রতীকের দৌড়াদৌড়িতে আদর্শবান নেতারা পিছিয়ে যাচ্ছে। সত্য বলা মানুষ গুলো লুকিয়ে যাচ্ছে। দলে স্থান হচ্ছে চাটুকার ধান্ধাবাজ, কুঠিল প্রকৃতির লোক গুলো। আনেক সময় অযোগ্যদের হাতে প্রতীক দিয়ে সাধারন কর্মীদের তিক্ত রস পান করানো হচ্ছে। খারাপ লোক গুলো নির্বাচিত হয়ে ক্রমেই সওদাগর হয়ে উঠছে। জাতীয় নির্বাচনে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রশ্ন জড়িত সেখানে তেমন কিছু বলার থাকেনা।
তবে স্থানীয় নির্বাচনে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। মাপ কনবেন যে উর্বর মস্তিষ্ক স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের জন্য সরকারকে বুঝিয়েছেন। তিনিকি বিদ্রোহী দমাতে পেরেছেন? গ্রামের মানুষের ঐক্য বিনষ্ট টেকাতে? পেরেছেন। মনে হয় নেতা কর্মীদের বিভক্তি তৃণমূলে চলে এসেছে। এটা আমার ছোট মাথার কথা। বৃহৎ ফল কি বিজ্ঞ জনেরা জানেন। ধরুন আকাশ সরকারী দল করে। সে প্রতীকের জন্য দৌড়ঝাপ করছে। তাকে অন্যজনে বলে তুমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হও। তখন আকাশ বলে কি বুঝ তুমি। সরকারী দলের প্রতীক পেলে নির্বাচনে প্রভাব কাটানো যাবে এতে জয়লাভ করা সহজ। আর যদি হেরে যাই তবে পরিচয় দিব আমি অমুক দলের প্রার্থী ছিলাম সেটাই আমার সারা জীবনের লাটি। অথ্যাৎ জিতলে ষাট না জিতলে আশি। আবার পাতাল বিরোধী দল করে সে বিরোধী প্রতীক নিয়ে দৌড়ঝাপ করছে। সে বলছে যদি জিতি তাহলে ভাল না জিতলে দল
যদি ক্ষমতায় আসে তবে বড় মাপের মূল্যয়ন হবে আমি সে মোক্ষের আশায় আছি।
আবার অনেক স্থানে প্রতীক এলার্জি আছে। অনেকে বলে আমি দলীয় প্রতীক নিলে জিতবনা। তাই প্রতীক এলার্জির লোকেরা আমাকে ভোট দিবে। কথা গুলো এ কারনে বলছি প্রার্থীরা এখনো ভাল কৌশলে জিতার চিন্তাভাবনায় নেই। তাকিয়ে আছে পরিস্থিতির দিকে।পরিস্থিতি বুঝে বিশেষ দোয়া ও সমর্থনের জন্য প্রচুর বান্ডিল উপহার দেয়া হচ্ছে। বিশেষ ব্যক্তিদের দোয়া ও সমর্থন থাকলে নাকি ভোট কেন্দ্র , ইভিএম দখল করা যাবে। এখন ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে আসল মন্ত্রের গুণ দেখার জন্য।
জনসেবা, জনস্বার্থ, জনসম্পৃক্ততা, ভাল মানুষী এগুলো কি ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে? আমার কাছে মনেহয় ভাল লোকের কাছে প্রতীক গেলে ভাল। না হয় জনগণের গুয়ার্তুমী করে ভাল লোক বাচাই করা।
হে গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ, হে অগ্রসরমান বাংলাদেশ, হে বাংলার চালিকা শক্তি করজোড় মিনতি অধমের লেখা গুলো বিবেচনায় নিন। মাজরা পোকা উড়ছে প্রয়োজনে ভাল কিছু করুন। নীচের রশিতে টান নেই আমরা প্রান্তিক, আমরা বঞ্চিত।